লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে টুকরা টুকরা করে খুন করা হয় বিধবা মমতাজ বেগমকে (৫০)। এ ঘটনায় ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মজুপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার নিহত মমতাজের মেয়ে রোজি আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

সদর মডেল থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর থেকেই রকি পলাতক ছিলেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। এখন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মমতাজকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কসাই যেভাবে মাংস কাটে, সেভাবে তার দুই হাত ও দুই পা কাটা হয়েছে। এটি বীভৎস দৃশ্য ছিল।

মমতাজের বড় ছেলে শরীফুল ইসলাম বাপ্পীসহ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এসপি জানায়, গ্রামের বাড়িতে মমতাজ ও তার বড় ছেলে বাপ্পী ঈদ করতে যান; কিন্তু ছোট ছেলে রকি সেখানে যায়নি। সে কোয়ার্টারেই ছিল তিন দিন ধরে। ছোট ছেলের সঙ্গে মমতাজের মনমালিন্য ছিল। সোমবার সকালে বড় ছেলে রকি তার মাকে বাসে উঠিয়ে দেয় এখানে আসার জন্য। কিন্তু তখন বড় ছেলে আসেনি। এখানে ছোট ছেলে ছিল। পরে মমতাজের মরদেহ উদ্ধার করলেও ছোট ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

থানা পুলিশ জানায়, স্টাফ কোয়ার্টারটিতে রক্ত দেখা গেছে বলে রাতে ৯৯৯ এ কল আসে। এতে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থল আসে। বাসার সামনের দরজা বন্ধ ছিল। এতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় ঢুকে পুলিশ। ঢুকতেই মাংসের টুকরো পড়ে ছিল। তখনো বুঝা যায়নি সেটি কিসের মাংস ছিল। পরে একটি পাটি দিয়ে ঢাকা অবস্থায় মমতাজের বেগমের শরীরের কাটা অংশ দেখতে পাওয়া যায়।

জানা গেছে, নিহত মমতাজ বেগম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। তার স্বামী সড়ক বিভাগে চাকরি করতেন। স্বামী মতিন মারা যাওয়ার পর থেকেই মমতাজ তার দুই ছেলে বাপ্পী ও রকিকে নিয়ে সড়ক বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করে আসছেন। তার বড় ছেলে বাপ্পী বর্তমানে মাস্টার রোলে সড়ক বিভাগে কাজ করছেন।